বিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠা ও নামকরণের ইতিহাস
‘‘মূর্খের
উপাসনা অপেক্ষা জ্ঞানী নিদ্রা শ্রেয়”
পবিত্র
আল কোরানের এই আয়াতকে সামনে রেখে তৎকালিন
(১৯৬৩খ্রিঃ) নয়ানশুকা গ্রামের ধর্মপ্রাণ ও দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত
জনাব মোঃ তমিজ উদ্দীন আহম্মেদ অত্র গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে অত্র
এলাকার আলহাজ্ব মোঃ আবদুস সাত্তার, মোঃ দেরাশতুল্লাহ, মোঃ আলতাফ হোসেন, গোলাম
মোর্তুজা এবং আরো কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর বৈঠক খানায় ডেকে বিদ্যালয়
স্থাপনের কথা বলেন। তাঁর এই মহান উদ্দ্যোগকে উপস্থিত সকলে স্বাগত জানিয়ে অত্র
গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য একমত পোষণ করেন এবং তাঁকে সর্বাত্বক সাহায্য
করার প্রতিশ্রুতি দেন। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সবার আগ্রহ দেখে জনাব মোঃ তমিজ
উদ্দীন আহাম্মেদ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি উদার চিত্তে ঘোষনা দেন যে
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য যা অর্থ ও জমির প্রয়োজন হয় তা তিনি দিবেন। তাঁর এই ঘোষনা
মোতাবেক বর্তমানে বিদ্যালয়ের উত্তর প্রান্তে যে জরাজীর্ণ বিল্ডিং রয়েছে সেই ০.৩৯৫০
শতাংশ জমির উপর বিল্ডিং টি তৈরি হতে থাকে
এবং তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় নির্মান সামগ্রি তিনি প্রদান করেন। সেই ০.৩৯৫০ শতাংশ
জমি বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত।
০১/০১/১৯৬৪ খ্রীঃ তারিখে বিদ্যালয়ের নামকরণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে
জনাব মোঃ তমিজ উদ্দীন আহম্মেদ গ্রামের নামানুসারে নয়ানশুকা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
নাম প্রস্তাব করেন । কিন্তু উপস্থিত সকলে নয়ানশুকার পাশাপাশি তমিজ উদ্দীন নিম্ন মাধ্যমিক
নামকরণের জন্য জোর অনুরোধ জানান। সকলের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তিনি তাঁর নামের পরিবর্তে
তাঁর সহধর্মীনীর নাম রাসিদা খানম যুক্ত করে বিদ্যালয়ের নাম নয়ানশুকা রাসিদা খানম নিম্ন
মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামকরণের প্রস্তাব করেন
এবং তাঁর প্রস্তাবে সকলের সম্মতি জ্ঞাপন করেন সেই থেকে নয়ানশুকা রাসিদা খানম নিম্ন
মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠিত। পরে রাসিদা থেকে (R) আর এবং খানম থেকে (K) কে নিয়ে বর্তমানে বিদ্যালয়টির
নাম নয়ানশুকা আর.কে.উচ্চ বিদ্যালয় । তিনি যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন এই বিদ্যালয়টিকে
তাঁর সন্তানের মতো লালন পালন করেছেন। তাঁর
অবর্তমানে তাঁর যোগ্য উত্তরসরী জৈষ্ঠ পুত্র জনাব মোঃ মঞ্জুর আহম্মেদ এবং তাঁর অবর্তমানে তমিজ উদ্দীন
আহম্মেদের যোগ্য সন্তান সনাম ধন্য চিকিৎসক বিশিষ্ট সমাজসেবি জনাব ডাঃ মোঃ আবুল হাসান
অত্র বিদ্যালয়ের উন্নয়নের ধারাবহিকতা বজায় রেখেছেন যার ফলশ্রুতিতে ২০১৪ইং সালে সম্পূর্ণ
নিজস্ব অর্থায়নে পাঁচটি কক্ষ এবং প্রধান ফটক নির্মাণ করে দিয়েছেন যার নির্মাণ ব্যয়
২৫০০০০০/-(পঁচিশ লক্ষ্য) টাকা, ২০১৭-১৮ সালে বিদ্যালয়ের পশ্চিম প্রান্তে ৬০,০০,০০০/-(ষাট
লক্ষ) টাকা ব্যয়ে একটি সুদৃশ্য আধুনিক মসজিদ নির্মান এবং ২০১৯ সালে ৫,০০,০০০/-(পাঁচ লক্ষ) টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় তলায় একটি শ্রেণি কক্ষ ও একটি ওয়াস
ব্লক তৈরী করে দিয়েছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত তমিজ উদ্দীন আহম্মেদ এবং তাঁর
সন্তানেরা বা তাঁর পরিবার বংশ পরম্পরায় বিদ্যালয়টির উন্নয়নের জন্য যে অর্থ ও শ্রম দান
করেছেন তাঁর জন্য এলাকাবাসি বিদ্যালয়ের নামের মধ্যে (R-রাসিদা) (K-খানম) বসিয়ে মরহুম
তমিজ উদ্দীন এবং তাঁর পরিবারকে স্মরণীয় ও অনুকরণীয় এর প্রতীক হিসেবে দেখেন ।